শাহেদ মিজান, কক্সবাজার ::
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জেলার চার আসনের মধ্যে মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসন নিয়ে শুরু থেকেই আলোচনা বেশ তুঙ্গে রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী নিয়েই এই আলোচনা। এখন পর্যন্ত দু’জোটের প্রার্থী ঘোষণা না হওয়ায় জল্পনা-কল্পনা অব্যাহত রয়েছে।
আলোচনার মধ্যে ছিলো এই আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দীন আহমদের প্রার্থী হওয়া, সাবেক দু’বারের সংসদ সদস্য আলমগীর ফিরে আসা এবং জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদের আইনী জটিলতা। শেষ পর্যন্ত কি হচ্ছে তা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। বিএনপি জোটের চূড়ান্ত ঘোষণার পরই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তবে বর্তমানে আলমগীর ফরিদ এবং হামিদ আযাদের প্রার্থীতার বিষয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা এবং সমীকরণ চলছে।
বিএনপি ও জামায়াত যে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করছে তা প্রায়ই নিশ্চিত। শেষ পর্যন্ত তাই হলে আসনটি জামায়াতের প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমানের আযাদের নিশ্চিত ছিলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে হামিদুর রহমান আযাদ আইনী জটিলতায় নির্বাচন করতে পারবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। এই কথাটি জেলাজুড়ে চাউর হয়ে গেছে। তিনি নির্বাচন করতে না পারলে জামায়াতকে এই আসনটি ছাড়তে হবে। কারণ তাদের আর কোনো শক্তিমান প্রার্থী নেই। তিনি নির্বাচনের অনিশ্চিত হওয়ায় সদ্য প্রয়াত জিএম রহিমুল্লাহকে কক্সবাজার সদর-রামু আসনে মনোনয়নপত্র নিতে সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন বলে জামায়াত সূত্রে জানা গেছে।
হামিদ আযাদ প্রার্থী হতে না পারলে এই আসন পাবে বিএনপি। এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন নিয়েছেন বিএনপির তিন প্রার্থী। তারা হলেন, আলমগীর ফরিদ, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এটিএম নূরুল বশর চৌধুরী এবং মহেশখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কারান্তরীণ আবু বকর ছিদ্দিক। তিন প্রার্থীর মধ্যে স্বাভাবিক ভাবে শক্তিমান প্রার্থী আলমগীর ফরিদ। কারণ তিনি দু’বারের সাবেক নির্বাচিত সংসদ সদস্য। এছাড়া গ্রুপিংয়ে দলীয় প্লাটফর্ম থেকে ছিটকে পড়লেও মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় এখনো ৮০ ভাগ বিএনপি তার পক্ষেই রয়েছে! অন্যদিকে উন্নয়ন প্রকল্প ঘিরে এই আসনটি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে জয় নিশ্চিত করার জন্য এই আসনে শক্তিমান প্রার্থী দিতে চাইবে বিএনপি।
দলীয় সূত্র মতে, বড় কোনো অঘটন না ঘটলে এই আসনে বিএনপির মনোয়ন পাচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর ফরিদ। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও অবগত হয়েছেন এই আসনের ব্যাপারে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বড় ধরণের দর কষাকষি করে জিততে পারলে সেক্ষেত্রে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি এটিএম নুরুল বশরের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রুপিং জিইয়ে রাখার জন্য সালাউদ্দিন আহমেদ এই ঝুঁকি নিবে বলে মনে করছেন না নেতাকর্মীরা। কারণ ইতিমধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলমগীর ফরিদের ভাতিজা হাবিব উল্লাহ মনোয়ন ফরম নিয়েছেন। তাই আলমগীর ফরিদকে মনোনয়ন না দিয়ে নুরুল বশরকে মনোয়ন দিলে হাবিব উল্লাহ নির্বাচন করবে। সেক্ষেত্রে নৌকার জয় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই এটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। এই ঝুঁকি নিতে চাইবেন নাসালাউদ্দিন আহমদ। কারণ দলের দুর্দিন এবং ঝুঁকি নিয়ে জিততে না পারলে সেই দায়ভারও তাঁকে নিতে হবে। যদি তাই হয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত আলমগীর ফরিদই হচ্ছেন এই আসনের বিএনপির প্রার্থী!
পাঠকের মতামত: